মোঃ রাকিবুল ইসলাম,
রাজশাহী জেলা প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর দূর্গাপুরে পরকীয়া সম্পর্কের জেরে গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর মকবুল হত্যা মামলার প্রধান আসামী আলামিনসহ এজাহারভুক্ত ৫ জন পলাতক আসামীকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৫)।
র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ১১ মে ২০২৫ তারিখ রাত আনুমানিক ৪টায় কক্সবাজার সদর থানাধীন সুগন্ধা লাইট হাউজপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-মোঃ আলামিন (৩৫), শহিদুল ইসলাম (২৫), মোঃ শাহাবুর (৩০), মোঃ রিপন (২৫), এবং মোঃ মেহেদী হাসান ওরফে বাটুল (২২)। তাদের প্রত্যেকের বাড়ি রাজশাহী জেলার দূর্গাপুর উপজেলার দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নের তরিপতপুর গ্রামে।
র্যাব জানায়, গত ১৩ এপ্রিল তরিপতপুর গ্রামের ইসমাঈলের বাড়ীতে পরকিয়া সম্পর্কের জের ধরে মোছাঃ মৌ (৩০) নামের একটি মেয়ে আসে। ঘটনার বিষয় নিয়ে নিহত ভিকটিম এর গ্রামস্থ জনৈক সালামের বাড়ীতে শালিশের ব্যবস্থা হলে এজাহারনামীয় আসামীগন উক্ত বাড়ীতে এসে তাদের আধিপত্য বিস্তার করানোর জন্য নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে চায়। তখন নিহত ভিকটিমের গ্রামের লোকজন উক্ত বিষয় নিয়ে তাদের নাক গলাতে নিষেধ করে। এ বিষয় নিয়ে আসামীগন নিহত ভিকটিমের গ্রামের লোকজনের উপর ক্ষিপ্ত হয়।
উক্ত বিরোধে জের ধরে ইং ১৪ এপ্রিল রাত আনুমানিক সাড়ে আটটার দিকে দুর্গাপুর থানাধীন আমচত্ত্বর মোড়ে আসামীগন পূর্বপরিকল্পিত ভাবে হাতে চাইনিজ কুড়াল, হাসুয়া, লোহার রড, বাঁশের লাঠি ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মকবুল হোসেন সহ গ্রামের লোকজনের উপর অতর্কিত হামলা করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। মকবুল আসামীদেরকে বাধা দিলে আসামীরা তাদের হাতে থাকা ধারালো দেশীয় অস্ত্র দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথার ডান পার্শ্ব আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। মকবুলকে গ্রামের অন্যান্য লোকজন বাঁচাতে গেলে তাদেরকেও বিভিন্ন ভাবে রক্তাক্ত কাটা জখম করে।
পরবর্তীতে মকবুল ও অন্যান্যদের অবস্থা বেগতিক দেখে আসামীগন দ্রুত পালিয়ে যায়। মকবুলের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
এই মর্মান্তিক ঘটনাটি এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং তা দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। নিহত মকবুল হোসেনের স্ত্রী দূর্গাপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলে র্যাব-৫ ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে।
আসামী ধরতে তৎপর র্যাব
আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিল। র্যাব-৫ এর সিপিএসসি শাখার একটি চৌকস দল নিয়মিতভাবে তাদের গতিবিধি অনুসরণ ও বিশ্লেষণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় সফল অভিযান পরিচালনা করে পাঁচ আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
র্যাব জানায়, পলাতক অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে দূর্গাপুর থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।