তাহের তারেক
সাভারের আশুলিয়ায় আলোচিত রুবেল মন্ডল হত্যাকাণ্ডে জড়িত আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির সহ খুনীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী। আশুলিয়া ইউনিয়নের পাড়াগ্রাম এলাকায় এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নিহত রুবেল মন্ডল আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার রুহুল আমিন মন্ডলের ছোট ভাই। সে ঢাকার একটি রিহ্যাব সেন্টারে চাকরির পাশাপাশি রুহুল আমিন মন্ডলের মাছের খামার দেখাশোনা করতো।
গত ৭মে বুধবার সকালে তাকে এলাকায় দেখা গেলেও বেলা এগারোটার দিকে বিরুলিয়া ইউনিয়নের দেউলে রুহুল আমিন মন্ডলের মাছের খামারের পাশে তাঁর রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ রুবেল মন্ডলের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, নিহত রুবেল মন্ডলের বড় ভাই রুহুল আমিন মন্ডল পরপর দুইবার বিপুল ভোটে আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচিত হন। এলাকায় তিনি একজন সুপরিচিত ও জনপ্রিয়। তাঁর দায়িত্বশীল নেতৃত্বের কারণে এলাকায় অনেক গুলো শিল্প কারখানা গড়ে উঠে।
এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে ঐ সকল শিল্প কারখানার ঝুট ব্যবসা করা সহ এলাকায় মাছের খামার ও গরুর খামার গড়ে তুলেন। তার এসকল ব্যবসার দখল নিতে ৫ আগষ্টের পরে তার বিরুদ্ধে কয়েটি মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে এলাকা ছাড়া করা হয়।
পরে রুহুল আমিন মন্ডলের অনুপস্থিতে এই ব্যবসা-বাণিজ্য দেখভাল করতে তার ছোট ভাই রুবেল মন্ডলকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। এতেই বিপত্তি দেখা দেয়। ব্যবসা দখলের পথে রুবেল মন্ডলকে বাঁধা মনে করে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবিরের পরিকল্পনা মতে রুবেল মন্ডলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
স্থানীয়রা আরো জানান রুবেল মন্ডলকে সেদিন বাসা থেকে ডেকে নেয় আলাউদ্দিন আলো। পরে সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা শান্ত, গরুর ডা: জাকির, আমজাদ মন্ডল, জাইদুর মন্ডল, হামেদ মাদবর, কুদ্দুস মন্ডল, জুয়েল মাদবর, মুনসুর মন্ডল, মিজান মন্ডল ওরফে হায়েল মন্ডল, সেলিম মন্ডল, আবুল কাশেম দেওয়ান ও মিলন মন্ডল সহ অজ্ঞাত আরও ৬-৭ জন সন্ত্রাসীরা মিলে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।
নিহত রুবেল মন্ডলের ভাই আলমগীর মন্ডল বলেন রুবেল মন্ডলকে হুমায়ূন চেয়ারম্যানের লোকজন আরো পনেরো দিন আগে থেকেই হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। এছাড়াও দুদিন আগে জোর পুর্বক রুহুল মন্ডলের মাছের খামারের মাছ নিয়ে গিয়েছিল হুমায়ূন চেয়ারম্যানের লোকজন। রুবেল হত্যার ঘটনায় আলাউদ্দিন আলোকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও বাকিরা এখনো বাইরে রয়ে গেছে।
বাকিদের অতি দ্রুত আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবি জানান এলাকাবাসী। সেই সাথে এধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, এবিষয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা। এব্যাপারে আশুলিয়া থানার ওসি বলেন, রুবেল হত্যাকাণ্ডের ঘটনা গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে।