সীমানা পরিবর্তনের প্রতিবাদে ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ, দুই মহাসড়কে স্থবির যান চলাচল
ফরিদপুরে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণে ভাঙ্গা উপজেলাকে বিভক্ত করার সিদ্ধান্ত ঘিরে তীব্র ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন স্থানীয়রা। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে হাজারো মানুষ ভাঙ্গা গোলচত্বরে এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভে নামেন। এতে ঢাকা–বরিশাল ও ঢাকা–খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়, সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অবরোধ চলমান ছিল বলে জানা গেছে।
চার ঘণ্টা অবরোধের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের অনুরোধে বিক্ষোভকারীরা দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে অবরোধ তুলে নেন। তাঁরা জানান, আগামী সোমবারের মধ্যে ভাঙ্গাকে বিভক্ত করার সিদ্ধান্ত বাতিল না হলে মঙ্গলবার থেকে লাগাতার আন্দোলন শুরু হবে। তবে বিকেল চারটার দিকে ফের অবরোধ শুরু হলে আবারও ঢাকা–বরিশাল ও ঢাকা–খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নির্বাচন কমিশনের গেজেটে ফরিদপুরের দুটি সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তন করা হয়। এতে ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা–সদরপুর–চরভদ্রাসন) আসন থেকে ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন বাদ দিয়ে ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা–সালথা) আসনে যুক্ত করা হয়। এ সিদ্ধান্তের পর থেকেই ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করে।
বিকেলের অবরোধে নেতৃত্ব দেন আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম. ম. সিদ্দিক। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ভাঙ্গার এক ইঞ্চি মাটিও নগরকান্দার হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে না। নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তাঁদের অবরোধ অব্যাহত থাকবে।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকিবুজ্জামান জানান, ভাঙ্গা গোলচত্বরে দুটি মহাসড়কের প্রবেশমুখ স্থানীয়রা অবরোধ করে রেখেছেন। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে, তবে এখনো অবরোধকারীরা সড়ক ছাড়েননি।
অন্যদিকে, বেলা সোয়া একটার দিকে ঢাকা–বরিশাল মহাসড়কের পুখুড়িয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সমর্থকদের নিয়ে মিছিল করেন বাংলাদেশ কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী শহিদুল ইসলাম।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শহিদুল ইসলাম বলেন, “এই বিভাজন আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না। প্রয়োজনে আগামী রোববার ব্যক্তিগতভাবে কোর্টে যাব। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট ভাঙ্গার বিভাজন বন্ধ করতে হবে। কেউ কেউ ভেতরে ভেতরে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন, কিন্তু এ আন্দোলন দলমত নির্বিশেষে সবার। আমরা ঐক্যবদ্ধ।”