প্রকাশিত : ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৯:৪৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অবৈধ অস্ত্র দেখলেই জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মেঘনাপাড়ের গুয়াগাছিয়া পুলিশ ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, মুন্সীগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এখানে একটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা। আল্লাহর কৃপায় স্থায়ী না হলেও আপাতত সাময়িকভাবে ক্যাম্প চালু হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই এটি স্থায়ী রূপ নেবে। আমিও মুন্সীগঞ্জের সন্তান, তাই আমাদের জেলার বাইরে থাকা ভাইদের পক্ষ থেকেও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার আলোচিত মেঘনাপাড়ের গুয়াগাছিয়া পুলিশ ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, “গত তিরিশ–চল্লিশ বছরের ঘটনা আমি বলতে পারব না, তবে এখানে একটি পুলিশ ক্যাম্পের প্রয়োজনীয়তা আমি অনুভব করি। আমাদের দেশে এক হাজারেরও বেশি সমস্যা রয়েছে এটা অস্বীকার করা যায় না। তবে সেইসব সমস্যার মাঝেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। যা সঠিক মনে হবে, সেটিই করব। অনেকের নানা ধরনের স্বার্থ জড়িত থাকে, সবাই নিজের স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করবে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব, যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে।”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘নয়ন ও পিয়াশের প্রসঙ্গে আমি জিজ্ঞাসা করছিলাম—শোনা যাচ্ছে তারা দেশে নেই, পার্শ্ববর্তী কোনো দেশে চলে গেছে। তবে দেশে ফিরে এলে তাদের কেরানীগঞ্জ জেলখানা ছাড়া অন্য কোথাও স্থান হবে না। এই এলাকায় তাদের কোনো স্থান হবে না। ফাঁড়িটি স্থায়ী করার জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে চলে গেছে। আশা করছি, আল্লাহর কৃপায় এটি স্থায়ী ফাঁড়ি হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘যেসব অবৈধ অস্ত্র রয়েছে—আমি আগেই বলেছি, আমরা একটি ঘোষণা দিয়েছি; আপনারা আমাদের খবর দিন, আমরা ধরে ফেলব।  তিনি বলেন, “যে কেউ অবৈধ অস্ত্রের খবর দিলে তাকে পুরস্কৃত করা হবে এবং তার পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রাখা হবে। একই সঙ্গে পুলিশকে আরও শক্তিশালী করতে কোস্টগার্ডের টহল কার্যক্রম জোরদার করা হবে।

"
এসময় ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার, গজারিয়া ইউএনও মো. আশরাফুল আলম, মুন্সীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক সফিকুল ইসলাম,  কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তাবৃন্দ ও পুলিশ বাহিনীসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা ও গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার আলম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘ নদী পথ পাড়ি দিয়ে উপদেষ্টা দুর্গম এলাকার পুলিশ ক্যাম্পটি পরিদর্শনে খুশি স্থানীয়রা। গ্রামবাসীরা এ সময় দল বেঁধে এসে উপদেষ্টাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, পুলিশ ক্যাম্পটি স্থাপনের পর অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধসহ অনেক পরিবার আবার নিজ গ্রামে ফিরতে শুরু করেছে। উপদেষ্টা তাদের নিরাপত্তাসহ অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

মুন্সীগঞ্জ জেলার গত দুই বছরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আগের বছরের তুলনায় গত বছরে খুন ও ডাকাতির ঘটনা কমেছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মনে করেন, দুর্গম ও অপরাধপ্রবণ এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি বা ক্যাম্প স্থাপন করলে এই প্রবণতা আরও কমানো সম্ভব।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের পর স্থানীয় নৌডাকাত ও অবৈধ বালু উত্তোলনকারী চক্রের বাধার মুখেই এটি দ্রুত স্থায়ী ফাঁড়িতে রূপান্তরের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রস্তাব পাঠিয়েছে। গত ২২ আগস্ট গুয়াগাছিয়া অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু হয়। এর পরপরই ক্যাম্পবিরোধী মানববন্ধন, স্থানীয় ও ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন এবং টহলরত পুলিশের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় গুয়াগাছিয়া আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়