অক্টোবরের এক ঐতিহাসিক বিকেলে স্বাক্ষরিত হলো 'জুলাই সনদ', যা শুধু একটি চুক্তি নয়, বরং বর্বরতার আঁধার পেরিয়ে সভ্যতার আলোয় বাংলাদেশের নবযাত্রার এক জীবন্ত দলিল। এই সনদ স্বাক্ষরের মাহেন্দ্রক্ষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর আবেগঘন ভাষণে বলেন, "এর মধ্য দিয়ে ‘নতুন বাংলাদেশের সূচনা’ হলো। আমরা বর্বরতা থেকে সভ্যতার জগতে প্রবেশ করলাম।"
শুক্রবার বিকেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. ইউনূস এক নতুন সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তিনি অকপটে স্বীকার করেন, "আজকের দিনের মতো এমন একটি ঘটনা ঘটবে, তা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি।" ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা শুরুর সময় যে সংশয় ও দ্বিধা ছিল, তা সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এক অভূতপূর্ব ঐক্যের সুরে মিলিয়ে গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এই আলোচনা শুধু বন্ধ দরজার ভেতরে সীমাবদ্ধ ছিল না। টেলিভিশনের পর্দায় দেশের কোটি কোটি মানুষ এর সাক্ষী হয়েছে। ড. ইউনূস বলেন, "ঐকমত্য কমিশনে যে সৌহার্দ্যের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ তা সরাসরি দেখেছে। তারা শুধু দর্শক ছিল না, তারা মানসিকভাবে এই যাত্রায় অংশ নিয়েছে, নিজেদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক করেছে এবং সমাধানের অংশীদার হয়েছে।"
প্রধান উপদেষ্টা মনে করেন, এই সনদ কেবল বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং পুরো বিশ্বের জন্য একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই ঐক্যের ইতিহাস জানাতে তিনি বলেন, কীভাবে সকল প্রতিকূলতা সত্ত্বেও জাতি একমত হতে পারে, সেই গৌরবগাথা পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
সবশেষে, এই ঐক্যের সুরকে পাথেয় করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তাঁর বিশ্বাস, সেই নির্বাচনও বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের জন্য এক নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করবে।