জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গণনা যেন এক অনন্ত প্রতীক্ষার কাহিনি। গণনার হযবরল অবস্থা আর অস্বাভাবিক বিলম্বে ৩৩ বছরের অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হচ্ছে। সাংবাদিক থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও এ প্রতীক্ষার সঙ্গী। ভোট শুরুর পর থেকেই নিরবচ্ছিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহে মাঠে রয়েছেন সংবাদকর্মীরা। অগোছালো ব্যবস্থাপনা সত্ত্বেও তাদের উপস্থিতি থেমে থাকেনি এক মুহূর্তও।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ফলাফল না পাওয়ায় পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। গণমাধ্যমকর্মীরা তখনও ফলাফলের খবরের আশায় অপেক্ষায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের চোখেমুখেও ক্লান্তি স্পষ্ট। হাতে গণনা, জনবল সংকট—সব মিলিয়ে ফলাফল ঘোষণা যেন মরীচিকা।
সিনেট ভবন থেকে বটতলা, পুরো ক্যাম্পাস এলইডি স্ক্রিনের সামনে শিক্ষার্থীরা রাত কাটাচ্ছেন শুধু চূড়ান্ত ফলাফলের আশায়। অথচ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ভোটের ৩৫ ঘণ্টা পরেও নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আসেনি কোনো চূড়ান্ত ঘোষণা।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয় শুক্রবার সকালে, যখন দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও পোলিং অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌস মারা যান। গণনার গতি তখন আরও ধীর হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে নানা অনিয়মের অভিযোগে পদত্যাগ করেন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার। শিক্ষার্থী জোট একে দায়িত্বহীনতা আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানায়।
ভিসি অধ্যাপক কামরুল আহসান জরুরি বৈঠকে জনবল বাড়িয়ে দ্রুত গণনা সম্পন্নের আশ্বাস দিলেও ফলাফল ঘোষণার কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।
এই নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ১১ হাজার ৭৪৭ জন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৭৮ জন প্রার্থী। ভিপি পদে ৯ জন, জিএস পদে ৯ জন, নারী যুগ্ম সম্পাদক পদে ৬ জন এবং পুরুষ যুগ্ম সম্পাদক পদে লড়ছেন ১০ জন প্রার্থী। তবু চূড়ান্ত ফলাফল কবে আসবে, সেটিই এখন সবার একমাত্র প্রশ্ন।