প্রকাশিত : ১৫ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৫২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

ব্যবসা-বাণিজ্যে খুলছে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার, পর্যটনে আসছে গতি ও প্রাণচাঞ্চল্য

কক্সবাজার বিমানবন্দর পেল আন্তর্জাতিক মর্যাদার স্বীকৃতি

দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেল কক্সবাজার বিমানবন্দর। এই ঘোষণার পর যেন উৎসবের আমেজ সাগরপাড় জুড়ে। স্থানীয়দের মুখে এখন স্বপ্নের হাসি আর সংশ্লিষ্টদের মতে, এ স্বীকৃতি বদলে দেবে দেশের পর্যটনের মানচিত্র, খুলে দেবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও যোগাযোগের নতুন দুয়ার।

ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের পর এবার কক্সবাজারও যুক্ত হলো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনাকারী তালিকায়। আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় সমৃদ্ধ নতুন টার্মিনাল ভবনের কাজ শেষের পথে। দেশের দীর্ঘতম ১০ হাজার ৭০০ ফুটের রানওয়ে, যার মধ্যে ১ হাজার ৭০০ ফুট সাগরের বুক জুড়ে বিস্তৃত, ইতোমধ্যেই প্রস্তুত আন্তর্জাতিক উড়োজাহাজের জন্য।

গত ১২ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে আনুষ্ঠানিকভাবে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মর্যাদা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, জনস্বার্থে জারি করা এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনায় সম্পূর্ণ প্রস্তুত। পরিচালক গোলাম মুর্তজা হোসেন বলেন, “এটি কক্সবাজারের মানুষের জন্য বড় সুখবর। রানওয়ে, কাস্টমস, ইমিগ্রেশনসহ সব ব্যবস্থা প্রস্তুত। নতুন টার্মিনালে আগমন কার্যক্রম শুরু হবে, তবে আপাতত প্রস্থান পুরোনো ভবন দিয়েই হবে।”

এখন শুধু অপেক্ষা কবে প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট আকাশে ওড়াবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী সমাজ ও পর্যটন সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী, এ ঘোষণা কক্সবাজারের অর্থনীতিতে নতুন গতি আনবে। কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, “বিদেশি পর্যটক এলে শুধু পর্যটন নয়, আমাদের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও আমূল পরিবর্তন ঘটবে।”

তবে বিশেষজ্ঞদের মত, আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তা, আবাসন, বিনোদন ও যোগাযোগ সুবিধাও আরও উন্নত করা প্রয়োজন। ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের সভাপতি এম এম সাদেক লাবু বলেন, “শুধু বিমানবন্দর নয় বিদেশি পর্যটকদের জন্য হাসিমুখে আগমন ও প্রত্যাবর্তনের পুরো অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করাই হবে মূল লক্ষ্য।”

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির খবরে উচ্ছ্বসিত কক্সবাজারবাসীও। শহরের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, “বহুদিনের স্বপ্ন ছিল আমাদের কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমান চলবে অবশেষে সেটি বাস্তব হচ্ছে।” গাড়িচালক সাইফুল ইসলাম যোগ করলেন, “এখন কাজের সুযোগ ও আয়ের পরিধি দুটোই বাড়বে।”

সরকারি প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০২৬ সালের ডিসেম্বর নাগাদ পুরো অবকাঠামোগত উন্নয়ন শেষ হবে। তখন কক্সবাজার শুধু বাংলাদেশের নয়, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম পর্যটন ও বাণিজ্যিক গেটওয়ে হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।

স্বপ্ন এখন বাস্তব কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শুধু একটি স্থাপনা নয়, এটি দেশের নতুন সম্ভাবনার প্রতীক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়