প্রকাশিত : ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:৪০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তালতলীতে কিশোরী গণধর্ষণ ঘটনায় মামলা নেয়নি পুলিশ

বরগুনা জেলা সংবাদদাতাঃ বরগুনার তালতলীতে পাশের বাড়ির ভাবীর সহযোগিতায় এক কিশোরীকে নিয়ে রাতভর গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ইব্রাহিমসহ তার চার বন্ধুর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার গত ৫ দিন ধরে থানায় গেলেও গণধর্ষণের মামলা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওসি মো. শাহজালালের বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তাঁতীপাড়া এলাকার বশিরের স্ত্রী রিনা বেগম তার দূরসর্ম্পকের আত্নীয় ইব্রাহিম নামের এক যুবকের সাথে পাশের বাড়ির এক কিশোরীকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেয়। এর পরিপেক্ষিতে গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল ২৫)  রাতে রিনা বেগমের বাড়িতে ওই কিশোরী ও তার মাকে ডেকে নেওয়া হয়। এসময় কিশোরীর মায়ের অজান্তে কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভনসহ বিভিন্নভাবে ফুঁসলিয়ে ইব্রাহিমের সাথে মটরসাইকেলে পাঠিয়ে দেয় রিনা বেগম। ইব্রাহিম ওই কিশোরীকে নিয়ে রাত ১০ টার দিকে উপজেলার নকরী খেয়াঘাটে নিয়ে যায়। রাতে খেয়া না পেয়ে সেখানে একটি মাছের ঘেরে নিয়ে জোরপূর্বক রাতভর গনধর্ষণ করেন ইব্রাহিমসহ তার চার বন্ধু। এরপর সকালে ২'শ টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে কিশোরীকে চলে যেতে বলে। তখন কিশোরী ইব্রাহিমকে বিয়ের কথা বললে তিনি বলেন, তোকে বিয়ের জন্য নিয়ে আসা হয়নি। তোকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এই বলে ইব্রাহিমসহ তার বন্ধুরা পালিয়ে যায়। 

এদিকে মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পরে বিভিন্ন স্থনে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে রাতে ভুক্তভোগী পরিবার থানায় যায়। থানা থেকে বলা হয়েছে সকালে আসেন। কিশোরীর খোঁজ মিললে তাকে নিয়ে পরের দিন (২৪ এপ্রিল২৫) ফের থানায় যাওয়া হয়। বিস্তারিত পুলিশকে জানানো হয়। তবে এ ঘটনায় থানার ওসি মো. শাহ্জালাল গণধর্ষণের মামলা না নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারকে ধর্ষণের আলামত সংরক্ষন করে রাখতে বলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এদিকে এ ঘটনায় রিনা বেগম পলাতক রয়েছে।

ভুক্তভোগী কিশোরী বলেন, ইব্রাহিমের সাথে আগে দেখা বা পরিচয় ছিলো না। বাড়ির পাশের রিনা ভাবি আমাকে বিয়ের প্রস্তাবসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে রাতে ওই ছেলের সাথে পাঠিয়ে দেয়। আমাকে নিয়ে ইব্রাহিমসহ তার চার বন্ধু রাতভর ধর্ষণ করে। সকালে আমি ইব্রাহিমকে বিয়ের কথা বললে সে বলে তোকে তোর ভাবীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকায় ক্রয় করে এনেছি। তোকে বিয়ে করবো কেন ? এই বলে আমাকে বাড়িতে যাওয়ার জন্য ২’শ টাকা ভাড়া দিয়ে ফেলে রেখে যায় । 

ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বলেন, আমি মেয়েকে পেয়ে ইউপি সদস্য শাকিল খানসহ কয়েকবার থানায় যাই। বিস্তারিত ঘটনা পুলিশকে একাধিকবার জানাই। তবে ওসি সাহেব কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। আমরা জিডি করতে চাইলেও নানা অজুহাত দেখায় এবং ইব্রাহিমকে থানায় ডাকার কথা বলে। আমার মেয়ের সাথে যে ঘটনা ঘটেছে তার বিচার চাই।

ইউপি সদস্য শাকিল খান বলে, ঘটনার বিষয়টি শুনে ওই মেয়ের পরিবারের সাথে আমিও থানায় যাই। তবে ছেলের সঠিক পরিচয় না পেয়ে মামলা নেয়নি পুলিশ। আলামত রেখে দিতে বলেছেন তারা।

তালতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ্জালাল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, লিখিত এবং মৌখিক কোনো অভিযোগ পাইনি। তারা এসেছিলো নিখোঁজের জিডি করতে এনআইডি এবং ছবি নিয়াসতে বলা হয়েছে। পরদিন মেয়েকে নিয়ে থানায় এসেছে। আমাকে ধর্ষণ সম্পর্কে কিছু বলে নাই। 

বরগুনা পুলিশ সুপার মো.ইব্রাহিম খলিল বলেন, এবিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ঘটনার সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়