প্রকাশিত : ১১ মে, ২০২৫, ০৫:২১ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিধি বহিঃর্ভূত নিয়োগে স্বাস্হ্য অধিদপ্তরের ডিজি ও স্বাস্হ্য সচিব বরাবর অভিযোগ, ক্ষমতার বলে নিজ আত্মীয় স্বজনকে আউটসোর্সিং এ নিয়োগ। 

তাহের তারেক 

বর্তমান  সিভিল সার্জন হিসেবে কর্মরত আছেন  নিজ জেলা চুয়াডাঙ্গাতে ডাঃ হাদী জিয়াউদ্দিন আহমেদ। এই বিষয়ে বিধি না থাকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি ও স্বাস্থ্য সচিব বরাবর অভিযোগ পাওয়া যায় সিভিল সার্জন ডাঃ হাদী জিয়াউদ্দিনের বিরুদ্ধে। 

 তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বাস্হ্য বিভাগের নীতিমালা  ২০১৬ এর সিভিল সার্জন পদায়নের ক্ষেত্রে নিজ জেলা পরিহারের বিধান স্পষ্টত উল্লেখ থাকলেও তা বর্তমান সিভিল সার্জন ডাঃ হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদের ক্ষেত্রে উপেক্ষিত হচ্ছে বলে জানা যায়। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, সিভিল সার্জন চুয়াডাঙ্গা  জেলারই একজন বাসিন্দা। ডাঃ হাদী জিয়াউদ্দিন আহমেদ  আলমডাঙ্গা থানাধীন উদয়পুর গ্রামের মৃতঃ আহমেদ আলীর সন্তান। বর্তমান স্টেশন পাড়া আলমডাঙ্গার  নিজ বাড়িতে বসবাস করেন। তার স্ত্রী ডাঃ শারমিন  আক্তার আলমডাঙ্গা থানাধীন  যাদবপুর গ্রামের মৃতঃ আবু সাঈদের কন্যা। বর্তমান আলমডাঙ্গা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্হ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত আছেন। 

নিজ জেলাতে তিনার ডক্টরস কেয়ার  নামে একটি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার আছে। গত২০২২ সালে আলমডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় দালাল মাধ্যমে নিজ ক্লিনিকে রোগী ভাগিয়ে নেওয়া ও বিভিন্ন অনিয়ম  বিষয়ে তিনার বিরুদ্ধে যমুনা টেলিভিশনের একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এছাড়া দ্যা নিউজ টোয়িন্টিফোর ডটকমে ২০২৪ সালে ৯ ই মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক থাকা অবস্থায় স্বাস্থ্য সেবা পার-২ শাখার যুগ্ম সচিব মন্জুরুল হাফিজ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে ওএসডি করা হয়। সেই প্রতিবেদনেও অবৈধ হাসপাতাল পরিচালনার অভিযোগ উঠে। ডক্টরস কেয়ার এন্ড স্পেসালাইস্ট হসপিটালটি ডাক্তার দম্পতি পরিচালনা করেন।  ডাঃ হাদী জিয়াউদ্দিন আহমেদ  আলমডাঙ্গা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা স্বাস্হ্য ও পঃ পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে গত ৯/৯/২৪ তারিখে প্রথম প্রমোশন পেয়ে ম্যাটসে অধ্যক্ষ হিসেবে পদোন্নতি পান। 
তার এক মাস পর ৯/১০/২৪ তারিখে সিভিল সার্জন হিসেবে ঝিনাইদহতে পদোন্নয়ন পান। শেষ ২৫/১২/২৪ তারিখে ট্রান্সফার হয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলায় সিভিল সার্জন হিসেবে যোগদান করেন। 

ডাঃ  হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ কর্মজীবনে তিনি অত্যন্ত চতুরতার সহিত ক্ষমতাসীন  দলের  সহিত সখ্যতা রাখেন বলে যায়। তার অন্যতম বাস্তব উদাহরণ হিসেবে বিগত সরকারের শাসনামলেও  স্থানীয় সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দার সেলুনের সহিত তার পরিবারসহ ফুলের শুভেচ্ছা বিনিময় এবং নিয়মিত যাতায়াতের বিষয়ে  জনমনে প্রশ্ন। অনেকের ধারণা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে তার কর্মস্থল আলমডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা হিসাবে দাপট ছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে ঠিক পরিবারতন্ত্র হিসাবে নিজে সিভিল সার্জন এবং তিনার স্ত্রী ডাঃ শারমিন আক্তার আলমডাঙ্গা হারদীতে স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা হিসাবে  কর্মরত আছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক (অবঃ) অনেকের মতে স্বাস্থ্যবীধি বিষয়ে আমরা অবগত নাই তবে প্রশাসনিক পদে থাকায়  বিভিন্নক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার দৃশ্যমান। 

এদিকে, তার স্ত্রী শারমিন আক্তার চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া স্বত্তেও নানারকম কায়দা কৌশল করে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে বহাল তবিয়তে এখনো কর্মরত আছেন। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, অর্থের প্রভাব খাটিয়ে অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করেন এই চিকিৎসক দম্পতি। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী একজন সিভিল সার্জনের নিজ এলাকায় দায়িত্ব পালনের সুযোগ নেই। কিন্ত সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলার বর্তমান সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়াউদ্দিন আহমেদ। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রশাসন ডাঃ রিজওয়ানুর রহমান বলেন, বিধি মোতাবেক নিজ জেলাতে একজন সিভিল সার্জন পদে থাকতে পারে না,এই বিষয়ে কোন অনিয়ম আপনাদের মাধ্যমে দৃষ্টিগোচর হলেপ্র আইন অনুযায়ী ব্যবস্হা নেওয়া হবে। 
 অত্র এলাকার স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, অতি মুনাফালোভী এই ডা. দম্পতির রয়েছে নামে-বেনামে বিপুল পরিমান সম্পদ। পেশায় চিকিৎসক হওয়ার সুবাধে আয়েশা পার্ক নামে গড়ে তুলেছেন আটতলা বিশিষ্ট বহুতল ভবন যেখানে রয়েছে তাদের নিজেদের মালিকানায় পরিচালিত ডক্টরস কেয়ার নামে একটি হসপিটাল। তবে কাগজে কলমে মালিকানা দেখানো হয়েছে বিভিন্নজনের নামে। সরকারী চাকরিজীবী হওয়ায় বহুতল ভাবনটির কাগজে কলমে মালিকানায় রয়েছেন ডাক্তারের শাশুড়ী মালিহা আক্তার পলি। তার নামেই ভবনটির নাম দেয়া হয়েছে আয়েশা পার্ক।
বিধি মোতাবেক নিজ জেলাতে বহাল থাকা এবং নিজ নামে ক্লিনিক পরিচালনা করায় ক্লিনিক অভিযানের ক্ষেত্রেও বৈষম্যতার শিকার হওয়ার বিষয়ে কিছুদিন পূর্বের অভিযানে জনগণে অস্বস্তি রয়েছে বলে অনেকের ধারনা। তার নিজ জেলাতে থাকাকে কেন্দ্র করে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে,সন্দেহজনক এবং ব্যক্তিগত আক্রোশে মাতোয়ারা হয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে কয়েকজন নিম্ন পদের কর্মচারীদের হুমকি আইন পরিপন্থী স্বাভাবিক চাকরি করার অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন এই ডাঃ হাদী জিয়াউদ্দিন আহমেদ। 
এদিকে বর্তমান এই সিভিল ক্ষমতার বলে এমনই বিভোর কৌশলে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবাপন্ন নিজের প্রতিষ্ঠানের পার্শ্ববর্তী ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। 
নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে আলমডাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ বিভিন্ন জায়গায় আউটসোর্সিং এ নিজ আত্মীয় স্বজন দের নিয়োগ দানের মাধ্যমে নিজের ক্লিনিকে অঘোষিত দালাল হিসাবে রোগী পাঠানোর কাজ করবে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকের ধারনা। উল্লেখ্য রেখা আকতার ও আশরাফুল সিভিল সার্জনের আত্মীয় হিসাবে নিয়োগ প্রদান করেছেন বলে জানা যায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়