প্রকাশিত : ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৯:৫৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জামায়াত জোটে ‘না’—নাহিদ ইসলামকে আপত্তির চিঠি এনসিপি নেতাদের

জামায়াতে ইসলামীসহ আট দলীয় রাজনৈতিক জোটের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সম্ভাব্য জোট নিয়ে আপত্তি তুলেছেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির ৩০ জন নেতা। বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে শনিবার এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের কাছে একটি লিখিত চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দলের যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন।

চিঠিতে নেতারা উল্লেখ করেন, এনসিপির ঘোষিত আদর্শ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা এবং গণতান্ত্রিক নৈতিকতার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক অবস্থান মৌলিকভাবে সাংঘর্ষিক। এসব বিবেচনায় উক্ত জোটের বিষয়ে তারা স্পষ্ট আপত্তি জানিয়েছেন।

চিঠিতে বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গত এক বছরে জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবিরের বিভাজনমূলক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, অন্যান্য রাজনৈতিক দলে গুপ্তচরবৃত্তি ও নাশকতার অভিযোগ, এনসিপির ওপর অপকর্মের দায় চাপানোর চেষ্টা, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ (বাগছাস) ও পরবর্তী সময়ে ছাত্রশক্তি নিয়ে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার, অনলাইন মাধ্যমে এনসিপি ও তাদের ছাত্রসংগঠনের নারী সদস্যদের চরিত্রহননের অপচেষ্টা এবং ধর্মকে ব্যবহার করে সামাজিক ফ্যাসিবাদ তৈরির আশঙ্কা—সব মিলিয়ে দেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি হয়েছে।

এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর অতীত রাজনৈতিক ভূমিকার প্রসঙ্গ টেনে চিঠিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় দলটির স্বাধীনতাবিরোধী অবস্থান, গণহত্যায় সহযোগিতা এবং সে সময় সংঘটিত অপরাধ নিয়ে তাদের অবস্থান বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চেতনা ও এনসিপির মূল মূল্যবোধের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

নেতাদের মতে, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কোনো ধরনের রাজনৈতিক জোট এনসিপির নৈতিক অবস্থানকে দুর্বল করবে এবং এর ফলে দলের রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এর আগে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী একাধিকবার ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। দলটি প্রায় দেড় হাজার মনোনয়নপত্র বিক্রি করে ইতোমধ্যে ১২৫ জন প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এই অবস্থায় অল্প কয়েকটি আসনের জন্য কোনো জোটে যাওয়া জাতির সঙ্গে প্রতারণার শামিল বলে মনে করছেন তারা।

নেতারা বলেন, জোট গঠনের সম্ভাবনার খবর গণমাধ্যমে আসার পরপরই দলের সমর্থক কর্মী-সংগঠকসহ উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ এনসিপির প্রতি তাদের সমর্থন প্রত্যাহারের কথা ভাবছেন। মধ্যপন্থী ও নতুন ধারার রাজনীতিতে বিশ্বাসী এসব মানুষ সমর্থন সরিয়ে নিলে ভবিষ্যতে দলটি তার গুরুত্বপূর্ণ সমর্থক ভিত্তি হারাতে পারে।

চিঠিতে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক জোটে না যাওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। নেতারা বলেন, নীতিগত অবস্থানের ভিত্তিতেই রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারিত হওয়া উচিত; কৌশলগত স্বার্থে নীতির সঙ্গে আপস করা ঠিক হবে না।

চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন, কেন্দ্রীয় সংগঠক আরমান হোসাইন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক খান মো. মুরসালীন, সংগঠক রফিকুল ইসলাম আইনীসহ দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আরও কয়েকজন নেতা।

চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, যুগ্ম সদস্যসচিব মুশফিক উস সালেহীন, কেন্দ্রীয় সংগঠক আরমান হোসাইন, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক খান মো. মুরসালীন, সংগঠক রফিকুল ইসলাম আইনীসহ দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আরও কয়েকজন নেতা।

  • সর্বশেষ