প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন প্রসঙ্গে বলেছেন, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের কার্যক্রম পছন্দ না করায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। নিউইয়র্কে এশিয়া সোসাইটি ও এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. ইউনূস বলেন, “আঞ্চলিক সহযোগিতা সবার জন্যই মঙ্গলজনক। আমাদের আঞ্চলিক অর্থনীতি নিয়ে ভাবতে হবে। কিন্তু বর্তমানে ভারতের সঙ্গে সমস্যায় পড়েছি, কারণ তারা শিক্ষার্থীদের কার্যকলাপ ভালোভাবে নিচ্ছে না।”
তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট ও তরুণদের প্রাণহানির জন্য দায়ী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। এ ছাড়া ভারত থেকে ভুয়া খবর ছড়ানো হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। ইসলামি আন্দোলন ও তালেবান প্রসঙ্গ টেনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের মিথ্যা প্রচারণার সমালোচনাও করেন নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।
ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত। আমরাও অন্য দেশে বিনিয়োগ করব। সার্কের মূল ভাবনা ছিল দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে পরিবারের মতো একত্রিত করা, যাতে তরুণরা শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ব্যবসার মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতে পারে।” তবে রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে কিছু উদ্যোগ স্থগিত করতে হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য সমুদ্রবন্দরের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এসব অঞ্চলের জন্য আঞ্চলিক সহযোগিতা অপরিহার্য।
মিয়ানমার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। “আমরা চাই, মিয়ানমারের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকুক। দ্বন্দ্ব কারও উপকারে আসে না।”
আসিয়ানকে কার্যকর আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের অনানুষ্ঠানিকভাবে এই জোটের অংশ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। “আঞ্চলিক সমন্বয় ও আন্তঃসংযোগ বাড়াতেই আসিয়ান কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।”