ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির মাঝেও দু’দেশ একে অপরকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে যাচ্ছে। এই টানটান পরিস্থিতির কেন্দ্রে যেসব নেতাদের নাম ঘুরে ফিরে আসছে, তাঁদের একজন হলেন আয়াতুল্লাহ আলি খামেইনি—ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা। তবে সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে নতুন করে আলোচনায় এসেছে তাঁর একটি অদ্ভুত অভ্যাস—তিনি কেবল বাঁ হাত ব্যবহার করেন। ভাষণ, সালাম, ইশারা—সবই বাঁ হাতে!
এমন দৃশ্য দেখে অনেকে কৌতূহলী হয়ে জানতে চান, কেন তিনি ডান হাত ব্যবহার করেন না?
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৮১ সালের ২৭ জুন। তেহরানের আবুজার মসজিদে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন আয়াতুল্লাহ খামেইনি। সেই সময়, এক যুবক তাঁর সামনে একটি টেপ রেকর্ডার রেখে দেন। কিন্তু সেটি ছিল বোমা ভর্তি একটি ডিভাইস। যখন রেকর্ডারটি চালু করা হয়, সঙ্গে সঙ্গে তীব্র শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।
এই বোমা হামলায় খামেইনির ডান হাত গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আংশিকভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এছাড়া, তাঁর ফুসফুসের অংশ, কানের স্নায়ু এবং বুকের ডান পাশ মারাত্মকভাবে আহত হয়।
বিস্ফোরণের পর দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয় খামেইনিকে। এক চিকিৎসক তখনই তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে অন্য একদল চিকিৎসক হাল না ছেড়ে অস্ত্রোপচার চালিয়ে যান। সেই চিকিৎসকদের নিরলস প্রচেষ্টায় খামেইনি জীবন ফিরে পান।
অপারেশনের পর খামেইনি কথা বলতে পারছিলেন না। বাঁ হাতে লিখে তিনি প্রথমে জিজ্ঞেস করেন,
“আমার মসজিদের সঙ্গীরা কি নিরাপদ আছেন?”
তারপর যখন জানতে পারেন, তাঁর ডান হাত অচল হয়ে গেছে, তখন তিনি বলেন:
“যদি আমার মস্তিষ্ক ও জিহ্বা কাজ করে, তবে আমার হাতের প্রয়োজন নেই।”
বর্তমানে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সাময়িক যুদ্ধবিরতি চললেও উভয়পক্ষ একে অপরকে লক্ষ্য করে অস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে খামেইনির জীবন ও ইতিহাস আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচিত হচ্ছে। ইরানের ভেতরেও তাঁকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে এক ধরনের প্রতিরোধের প্রতীক।