প্রকাশিত : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:২৬ রাত

প্রতিবেদক : Tanjir Jannat Koly

ঘরে তৈরি ভাইরাল রাইস পেপার মাস্ক: ঝকঝকে ও সতেজ ত্বকের সহজ উপায়

মুখের আকারে কেটে রাইস পেপার মাস্ক ১০–১৫ মিনিট ধরে লাগিয়ে রাখুন।

চালের গুঁড়া, পানি আর ট্যাপিয়োকা স্টার্চে তৈরি পাতলা এক শিট যেটা ভিয়েতনামিদের রান্নাঘরে স্প্রিং রোল জড়ানোর কাজে লাগে এবার সেটা টিকটক থেকে কোরিয়ান বিউটি ব্লগ পর্যন্ত জায়গা করে নিয়েছে একেবারে ফেস মাস্ক হয়ে। হ্যাঁ, আমরা কথা বলছি রাইস পেপার মাস্ক নিয়ে, যা এখন সোশ্যাল মিডিয়ার নতুন স্কিনকেয়ার ট্রেন্ড।

রাইস পেপার আসলে কী:

ভিয়েতনামের খাবারের টেবিলে রাইস পেপার পানিতে ভিজিয়ে নরম করে বিভিন্ন রোল বানানো হয়। কিন্তু সৌন্দর্যচর্চায় এই একই শিট সিরাম বা টোনারের বাহক হিসেবে কাজ করতে পারে। তবে খেয়াল রাখবেন সব ধরনের "রাইস পেপার" ত্বকের জন্য উপযোগী নয়। কারুশিল্পে ব্যবহৃত যেসব রাইস পেপার আছে, সেগুলো কখনো খাবার বা স্কিনকেয়ারে ব্যবহারযোগ্য নয়।

রাইস ওয়াটারের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না:

অনেকে ভেবে বসেন রাইস পেপার মানেই রাইস ওয়াটার। আসলে দুটো একেবারেই আলাদা। রাইস ওয়াটার হলো চাল সেদ্ধ করার সময় পাওয়া স্টার্চ সমৃদ্ধ পানি, যা হাইড্রেশন আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কিছুটা কার্যকর বলে গবেষণায় দেখা গেছে। আর রাইস পেপার হলো শুকনো, কড়কড়ে শিট যেটা আপনি পানিতে ভিজিয়ে মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

কেন কাজে দেয়:

যেকোনো শিট মাস্কই ত্বকের ওপর আর্দ্রতার আস্তরণ তৈরি করে। এর ফলে পানিশূন্য ত্বক কিছুটা স্বস্তি পায়। রাইস পেপারও একইভাবে ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং আপনি যে সিরাম বা টোনার মিশিয়ে দেবেন, সেটার কার্যকারিতা আরও বাড়িয়ে দেয়। তবে মনে রাখবেন রাইস পেপারে নিজস্ব কোলাজেন বা হায়ালুরনিক অ্যাসিড নেই, সেগুলো আলাদাভাবে যোগ করতে হবে।

টিকটক ট্রেন্ড

বিউটি ক্রিয়েটররা নানা রকম এক্সপেরিমেন্ট করছেন কেউ গ্রিন টি, কেউ অ্যালোভেরা, আবার কেউ ভিটামিন সি সিরাম ভিজিয়ে ব্যবহার করছেন রাইস পেপার মাস্কে। ফলে শুধু হাইড্রেশন নয়, বরং গ্লো, উজ্জ্বলতা আর কুলিং ইফেক্টও মিলছে।

বাড়িতে বানানোর ধাপ

১. ফ্লেবারবিহীন খাবার উপযোগী রাইস পেপার বেছে নিন।
২. কুসুম গরম পানিতে সামান্য গোলাপজল বা অ্যালো জেল মিশিয়ে নিন।
৩. তাতে রাইস পেপার ১৫–৩০ সেকেন্ড ভিজিয়ে নরম করুন (অতিরিক্ত নরম করবেন না)।
৪. মুখের আকারে কেটে ১০–১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন।
৫. শুকনো হওয়ার আগেই খুলে মৃদু ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

সপ্তাহে ১–২ বার এই মাস্ক ব্যবহার করাই যথেষ্ট।

উপকারিতা

  • হাইড্রেশন বুস্ট: শুষ্ক বা ডিহাইড্রেটেড ত্বক তাৎক্ষণিক আর্দ্রতা পায়।

  • কুলিং এফেক্ট: রোদে থাকার পর ত্বকে দেয় ঠান্ডা অনুভূতি।

  • উজ্জ্বলতা: ভিটামিন সি বা নায়াসিনামাইড সিরামের সঙ্গে ব্যবহার করলে দাগ হালকা হয়।

  • আরামদায়ক: সংবেদনশীল ত্বকের জন্যও বেশ কোমল অনুভূতি আনে।

যা মনে রাখবেন

  • মাস্কে সঠিক সিরাম যোগ না করলে শুধু হাইড্রেশনই পাবেন।

  • সানস্ক্রিনের বিকল্প নয় বাইরে বের হলে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন।

  • ব্রণ বা সংক্রমণ থাকলে ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।

  • পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা মেনে নিন এবং শুধু খাবার উপযোগী রাইস পেপার ব্যবহার করুন।

  রান্নাঘরের এই সহজ উপকরণ আপনার বিউটি রুটিনে জায়গা করে নেবে কি না, সেটা একবার চেষ্টা করেই বুঝবেন।

তথ্যসূত্র: আমেরিকান একাডেমি অব ডার্মাটোলজি, ভিয়েত ওয়ার্ল্ড কিচেন, সিরিয়াস ইটস, মেডিকেল নিউজ টুডে, অ্যালিউর, পিএমসি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়