প্রকাশিত : ১৪ মে, ২০২৫, ০৯:০৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ওসি মো. আফজাল হোসেন: শিবপুর থানায় ন্যায়বিচার, মানবিকতা ও আধুনিক পুলিশের প্রতিচ্ছবি

নরসিংদী প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্যের দায়িত্ব হলো জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অপরাধ দমন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। এসব দায়িত্বকে নিষ্ঠা ও মানবিকতায় রূপান্তরিত করে শিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আফজাল হোসেন হয়ে উঠেছেন একটি প্রগতিশীল, জনবান্ধব ও নির্ভরযোগ্য পুলিশ প্রশাসনের উজ্জ্বল প্রতীক।

শিবপুর থানার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি অপরাধ দমনের পাশাপাশি জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। প্রশাসনিক দক্ষতা, নৈতিকতার প্রতি অঙ্গীকার এবং সাধারণ মানুষের প্রতি গভীর সহানুভূতির কারণে তিনি এলাকায় একজন আস্থাশীল প্রশাসক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত।

২০২৪ সালের জুলাই মাসে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ইটাখোলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় নিহত হন এক শিক্ষার্থীসহ চারজন। নৃশংস এই ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। শিবপুর থানায় দায়ের হয় একটি হত্যা মামলা, যা তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল ছিল।
ওসি আফজাল হোসেন নিজেই মামলার তদন্তে সক্রিয় হন এবং একটি সুপরিকল্পিত তদন্তের মাধ্যমে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের প্রভাবশালী নেতাসহ মোট ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনেন। রাজনৈতিক চাপ, হুমকি ও জটিলতা উপেক্ষা করে তিনি আইনানুগ প্রক্রিয়ায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতের যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা পুলিশ প্রশাসনের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

শুধু বড় অপরাধ বা রাজনীতি সংশ্লিষ্ট মামলাতেই নয়, সাধারণ মানুষের ছোটখাটো সমস্যা সমাধানেও ওসি আফজাল হোসেন পরিচয় দিয়েছেন অসাধারণ মানবিকতার। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে শিবপুর থানায় একটি পাওনা টাকা সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় ব্যবসায়ী আবু সাঈদ। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে ওসি আফজাল এসআই ইসমাইলকে নির্দেশ দেন উভয় পক্ষকে থানায় হাজির করার জন্য। দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা বৈঠকের পর পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা হয় পাওনা টাকার বিরোধ। অভিযোগকারী আবু সাঈদের ভাষায়, “ওসি স্যার খুব ভালো মানুষ। তিনি আমার কথাটি গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন এবং দ্রুত সমাধান করে দিয়েছেন। আজকের দিনে এমন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা পাওয়া ভাগ্যের বিষয়।”

আইজিপি ব্যাজ প্রাপ্তি: পেশাদারিত্বের স্বীকৃতি

ওসি মো. আফজাল হোসেন তার পেশাগত উৎকর্ষতা, নিষ্ঠা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য ‘পুলিশ ফোর্স এক্সেমপ্ল্যারি গুড সার্ভিসেস ব্যাজ’ তথা আইজিপি ব্যাজে ভূষিত হয়েছেন। এটি বাংলাদেশ পুলিশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পেশাগত সম্মান, যা শুধুমাত্র তাদেরই প্রদান করা হয়, যারা কর্মক্ষেত্রে অসাধারণ কাজের মাধ্যমে উদাহরণ সৃষ্টি করেন। প্রতি বছর পুলিশ সপ্তাহে সারা দেশের কয়েকজন নির্বাচিত পুলিশ কর্মকর্তাকে এ ব্যাজ প্রদান করা হয়। ওসি আফজাল হোসেনের এই অর্জন কেবল তাঁর ব্যক্তিগত স্বীকৃতি নয়, এটি শিবপুর থানা এবং নরসিংদী জেলার সম্মানও বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে।


শিবপুর থানাকে আধুনিক রূপে গড়ার লক্ষ্য

ওসি আফজাল হোসেন থানা পরিচালনার ক্ষেত্রে শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষা নয়, প্রশাসনিক কাঠামো ও নাগরিক সেবা উন্নয়নের দিকেও সমানভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনি শিবপুর থানার অবকাঠামো উন্নয়ন, সিসিটিভি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, অনলাইন জিডি ও অভিযোগ ব্যবস্থাপনা চালু এবং পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি প্রযুক্তিনির্ভর, আধুনিক ও জনবান্ধব থানা গড়ে তুলতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।


শিবপুর উপজেলার সাধনাচারের বাসিন্দা রাব্বি মিয়া বলেন, ওসি আফজাল হোসেনে আচরণে নেই অহংকার বা দূরত্ব। থানায় আগত প্রতিটি মানুষের অভিযোগ শোনেন মনোযোগ দিয়ে। কোথাও অন্যায় হলে কঠোরতা, আর সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানে সর্বোচ্চ সহানুভূতি—এই নীতি নিয়েই চলছে তার নেতৃত্ব। এর ফলে শিবপুর থানায় এখন মানুষ আসে ভরসা নিয়ে, ভয় নয়।

স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুর ইসলাম ও ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ওসি মো. আফজাল হোসেন শুধু একজন প্রশাসক নন; তিনি জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ একজন সেবক। আইনের শাসন, মানবিকতা, এবং প্রশাসনিক দক্ষতার সম্মিলনে তিনি হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের পুলিশ প্রশাসনের একজন আদর্শ কর্মকর্তা। তার কাজ ও নেতৃত্ব নিঃসন্দেহে শিবপুর থানাকে একটি মডেল থানা হিসেবে গড়ে তুলবে।

উল্লেখ্য, কিশোরগ্যাং দমন , মাদকের জিরোটলারেন্স,  এলাকায় আওয়ামী দুঃশাসন কারী, জবরদখল কারী, সম্পদ আত্মসাত কারী মোট ৪৩ জনকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে শিবপুরে শীর্ষ সন্ত্রাসী জাহিদ চেয়ারম্যান জাহাজ, শীর্ষ দখলবাজ নাজির , রোড ডাকাত সরদার আজিজ, রুবেল, লিটন, জেল পলাতক নাদিম ব্যারেল নাদিম, আলামিন, চেয়ারম্যান নাদিম সরকার, শীর্ষ মাদক  ব্বসায়ী কাউসার, রুবেলসহ কিশোর গ্যাংয়ের ৩৫ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেন ওসি আফজাল হোসেন। 


শিবপুর থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, আমার সর্বপ্রথম দায়িত্ব হলো মানুষের সেবা দেয়া। দল-মত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের গুরুত্ব সবার ঊর্ধ্বে। অপরাধ দম ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমি বদ্ধপরিকর। যেখানেই অন্যায় হবে সেখানেই ন্যায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছি করে যাবো।

নরসিংদী পুলিশ সুপার আব্দুর রহমান বলেন, শিবপুর থানার ওসি দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। শিবপুরে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ভালো ভূমিকা পালন করছেন। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়