তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যে দেশের শিক্ষার্থীরা গভীরভাবে অপমানিত বোধ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ এ ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে আংশিক জবানবন্দি দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ ও ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলে আখ্যা দেন। তার মতে, এই মন্তব্য কেবল শিক্ষার্থীদের মর্যাদাহানি করেনি, বরং সরকারের দমননীতি কার্যক্রমের জন্য একটি ধরনের বৈধতা তৈরি করেছিল।
নাহিদ ইসলাম জানান, ওই বক্তব্যের পরই সারা দেশে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাতারাতি রাজপথে নেমে আসেন। আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলে ১৭ জুলাই গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আন্দোলন প্রত্যাহারের জন্য। একই সঙ্গে শাহবাগসহ বিভিন্ন থানায় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
এরপর ১৭ জুলাই রাতে ঘোষণা আসে দেশব্যাপী ‘কমপ্লিট শাটডাউন’। পরদিন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ছাত্রদের সক্রিয় অংশগ্রহণে প্রতিবাদ আরও জোরদার হয়। নাহিদের দাবি, ওই সময় আন্দোলনের নেতাদের প্রাণনাশের আশঙ্কা দেখা দিলে তারা আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হন। ১৮ ও ১৯ জুলাই পুলিশের গুলিতে বহু শিক্ষার্থী আহত ও নিহত হন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও জানান, সরকার ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয় এবং টেলিভিশন চ্যানেলগুলো থেকে আন্দোলনের খবর একপ্রকার অদৃশ্য হয়ে যায়।
এই মামলার অপর দুই আসামি হলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে আবদুল্লাহ আল-মামুন ইতোমধ্যে দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হয়েছেন।
ট্রাইব্যুনাল আজ নাহিদ ইসলামের আংশিক জবানবন্দি রেকর্ড করেছে। আগামী বৃহস্পতিবার তার জবানবন্দির অবশিষ্ট অংশ শোনা হবে।