শাহনাজ বেগম :
প্রকৃতিতে চলছে গ্রীষ্ম ঋতুর প্রভাব। বৈশাখের খরতাপ আর তীব্র তাপদাহে গত কয়েকদিন যাবত অতিষ্ঠ জনজীবন। দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস অবস্থার মধ্যে তীব্র গরম আরো বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় প্রয়োজন ছাড়া অনেকেই বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করে মাঠে-ঘাটে কাজ করছেন খেটে খাওয়া জনগণ। চালাচ্ছেন রিক্সা, ঠেলাগাড়ি।
সারাদেশের মতো মুন্সীগঞ্জেও চলছে তীব্র তাপদাহ শনিবার মুন্সীগঞ্জে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গরমে অতিষ্ঠ জীবনযাত্রা, জনগণে অস্বস্তি।
হিটস্ট্রোক, ডায়রিয়া, হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপসহ নানাবিধা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে জনসাধারণ।
বিশেষ করে হিটস্ট্রোকে নারীরা এবং ডায়রিয়া ও পানিশূন্যতাজনিত রোগে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানান মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার রুহুল আমিন। তিনি আরো জানান, শনিবার একজন নারী দোকানে ফটোকপি করতে আসার পর তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তাকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান তিনি ইট ইস ওকে আক্রান্ত হয়েছেন এবং প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ডায়রিয়া ও পানিশূন্যতা জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ডা. রুহুল আমিন আরো জানান, প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হতে এবং বের হলেও ছাতা ব্যবহারের ও বেশি বেশি পানি জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
দাবদাহের কারণে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাইরে মানুষের চলাফেরাও কমে আসছে। বিকেল পর্যন্ত মানুষের চলাচল খুব কম দেখা গেছে। আর এই তাপদাহের কারণে প্রচন্ড গরম আর রোদে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। কমেছে তাদের আয় রোজগার। রিক্সা চালকরা জানান একদিকে সাপ্তাহিক ছুটি অন্যদিকে তীব্র তাপদাহ এর কারণে মানুষঘর হতে বাইরে বেশি না বের হওয়ার কারণে তাদের আয় রোজগার গত ২-৩ দিনে অনেকখানি কমে গেছে।
এদিকে তীব্র তাপদাহে বাজারে চাহিদা বেড়েছে লেবুর শরবত, ডাব, আনারস, তালের শাঁস, আখের শরবতসহ ফল ও পানি জাতীয় খাবারের। প্রয়োজনীয় কাজে যারা অভির হচ্ছেন এই প্রচন্ড রোদে বিভিন্ন ফল বা শরবত বা পানি জাতীয় খাবার খেয়ে তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন। ডাব সাইজ ভেদে ৭০ থেকে ১৫০ টাকা, তালের শাঁস ১০ টাকা প্রতি পিস, লেবুর শরবত গ্লাস প্রতি ১০ টাকা করে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে , বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তীব্র এই তাপদাহ বজায় থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে চলতি সপ্তাহে তাপমাত্রা আরও দুই এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানান আবহাওয়াবিদরা। আবহাওয়াবিদদের মতে, এই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রী থেকে ৪২/ ৪৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে। দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।