এখন জাম্বুরার মৌসুম চলছে। বাজারে এই সুস্বাদু ফলটি এখন সহজলভ্য এবং কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। জাম্বুরা কেবল ভিটামিন সি-এর উৎস নয়, এতে ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২ এবং ফোলেটও রয়েছে। গড়পড়তা একটি জাম্বুরার খোসা ছাড়ানোর পর ওজন প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম হয়ে থাকে।
পুষ্টিবিদদের মতে, এই পরিমাণ জাম্বুরায় থাকা ভিটামিন সি এক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনন্দিন চাহিদার ৪০০ শতাংশেরও বেশি পূরণ করতে পারে। এছাড়াও, এতে থাকা অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদার বড় একটি অংশ পূরণে সহায়তা করে।
মোটামুটি বলতে গেলে, একটি জাম্বুরার চার ভাগের মাত্র এক ভাগ খেলে একজন প্রাপ্তবয়স্কের দৈনন্দিন ভিটামিন সি প্রয়োজন মিটে যাবে। তবে বেশি পরিমাণে জাম্বুরা খাওয়ার প্রয়োজন নেই, কারণ অতিরিক্ত ভিটামিন সি শরীরে জমে থাকে না; এটি পানির সঙ্গে দ্রবীভূত হয়ে প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। ফলে একদিনে বেশি খেয়ে কয়েক দিনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়, যদিও সামান্য বেশি খেলে কোনো ক্ষতি নেই।
ভিটামিন সি আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়ক এবং ত্বকের টানটান ভাব ধরে রাখার জন্য কোলাজেন প্রোটিন তৈরিতেও গুরুত্বপূর্ণ। জাম্বুরার আঁশ অন্ত্রে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পুষ্টি নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
জাম্বুরার আঁশ রক্তের ক্ষতিকর চর্বির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে পর্যাপ্ত আঁশ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এতে ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২, ফোলেট, কপার, পটাশিয়ামসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও থাকে, যা সার্বিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে জাম্বুরা সহায়ক হতে পারে এবং এটি ডায়াবেটিস রোগীর জন্যও ভালো। তবে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকায় দীর্ঘমেয়াদি কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এটি উপযুক্ত নয়।
যদি কেউ রক্তে খারাপ চর্বি কমানোর ওষুধ সেবন করেন, তারা জাম্বুরাকে ওষুধের বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করবেন না। কিছু ক্ষেত্রে এই ওষুধের সঙ্গে জাম্বুরা খাওয়া নিরাপদ নাও হতে পারে। তাই এরকম অবস্থায় অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।