প্রকাশিত : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৮:৪৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

খিটখিটে মেজাজ? সহজ কিছু উপায়ে ফিরে পান মানসিক প্রশান্তি

ছবিঃ সংগ্রহীত।

মেজাজ হারানো বা হঠাৎ রেগে যাওয়া  এটি অনেকেরই পরিচিত সমস্যা। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন চাপ, মানসিক অবসাদ, শারীরিক অসুস্থতা কিংবা ব্যক্তিগত ঘটনার প্রভাবে মেজাজ দ্রুত বদলে যেতে পারে। তবে কখনো কখনো এই পরিবর্তন চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে কোনো মানসিক সমস্যার ইঙ্গিতও হতে পারে।

যেমন, বাইপোলার মুড ডিসঅর্ডার-এ একজন ব্যক্তি কখনো অতি উৎসাহিত থাকে, আবার হঠাৎ করেই হতাশায় ডুবে যায়। দেখা যায় ঘুম কমে যাওয়া, ভুল ধারণা তৈরি হওয়া, সন্দেহ, অস্থিরতা বা মনোযোগের ঘাটতিও যুক্ত হয় এসব ক্ষেত্রে।
এছাড়া ঘুমের অভাব, ট্রমার পর মানসিক ধাক্কা (Post Traumatic Stress Disorder), বা দীর্ঘস্থায়ী উদ্বেগও মানুষকে সহজে উত্তেজিত করে তুলতে পারে।

তবে আশার কথা হলো সচেতনতা ও কিছু নিয়ম মেনে চললেই আপনি নিজের মেজাজকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।

চলুন জেনে নিই ৭টি সহজ কিন্তু কার্যকর উপায়:

 ১. শান্ত থাকার অভ্যাস গড়ুন

রাগ বা বিরক্তি যখন মাথায় চড়ে বসে, তখনই সবচেয়ে বেশি ভুল হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলে রাখা জরুরি। ১০ পর্যন্ত গুনুন, গভীর শ্বাস নিন। মাথা ঠান্ডা রাখলে পরিস্থিতি সহজেই সামাল দেওয়া যায়।

 ২. সব কথা গায়ে না মাখুন

মানুষ রাগের মাথায় অনেক কিছু বলে ফেলে, যা তাদের আসল মনোভাব নয়। তাই সবকিছু মনে নিয়ে নিজের মন খারাপ করার মানে নেই। কিছু জিনিস ‘দেখেও না দেখা’ এবং ‘শুনেও না শোনা’র ভান করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

 ৩. ঘুমকে গুরুত্ব দিন

পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের পাশাপাশি মনও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। গবেষণা বলছে, দৈনিক অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং মেজাজ স্থিতিশীল রাখে।

 ৪. সঠিক খাওয়াদাওয়া মেনে চলুন

আপনার খাবার আপনার মেজাজে প্রভাব ফেলে এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। ভিটামিন বি, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

 ৫. মন ভালো রাখা শিখুন

জীবনে সব সময় সবকিছু আমাদের ইচ্ছেমতো হবে না। তাই মন খারাপ করে বসে না থেকে নতুন কিছু করতে চেষ্টা করুন। নতুন মানুষের সঙ্গে মিশুন, নতুন অভিজ্ঞতা নিন। মন ভালো রাখতে যা যা করতে ভালো লাগে, তা করুন হোক সেটা গান শোনা, হাঁটতে যাওয়া, বা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা।

 ৬. ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় মন দিন

নিজের আগামী কয়েক বছরের পরিকল্পনা করে ফেলুন। লক্ষ্য নির্ধারণ করুন—কোথায় যেতে চান, কী হতে চান। এমন লক্ষ্য থাকলে মন অকারণে ছটফট করে না এবং নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়।

৭. প্রকৃতির সান্নিধ্যে যান

প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানো মানেই মানসিক প্রশান্তি। গাছগাছালি, খোলা আকাশ, পাখির ডাক—সবকিছুই আমাদের ভেতরের চাপ কমাতে সাহায্য করে। যদি চারপাশের মানুষদের আচরণে হতাশ হন, কিছুদিন প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটান পরিবর্তন বুঝতে পারবেন নিজেই।

শেষ কথা:
মেজাজ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে তা সম্পর্ক, কাজ এমনকি স্বাস্থ্যের ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলে। তাই সময় থাকতেই মেজাজের যত্ন নিন। প্রয়োজনে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে দ্বিধা করবেন না।

আপনার মন ভালো থাকুক, আপনার দিন হোক সুন্দর। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়