প্রকাশিত : ০২ মে, ২০২৫, ০৫:৪৮ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশের রাজনীতিতে 'ডিপ স্টেট': বাস্তবতা, প্রভাব এবং সংস্কারের অনিবার্যতা

বাংলাদেশের রাজনীতিতে সম্প্রতি এক গুরুত্বপূর্ণ ধারণা ঘন ঘন আলোচনায় এসেছে—'ডিপ স্টেট' বা 'অদৃশ্য রাষ্ট্রশক্তি'। এটি এমন এক গোপন ক্ষমতার কাঠামোকে নির্দেশ করে, যা দৃশ্যমান প্রশাসন ও নির্বাচিত সরকারের বাইরে থেকে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক প্রবাহে প্রভাব ফেলে। জনশ্রুতি এবং বিভিন্ন বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, বাংলাদেশের সরকার প্রধান স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছাড়তে চাইলেও, এই 'ডিপ স্টেট'-এর বাধার কারণে তা সম্ভব হবে না। এটি একটি চরম উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরে যেখানে নির্বাচিত নেতাদের স্বাধীন ইচ্ছাও বাস্তবায়িত হতে পারে না।
মূল প্রশ্ন হলো—এই ডিপ স্টেট কারা? তাদের প্রকৃতি কী? কীভাবে তারা বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামো, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, এবং নীতিনির্ধারণী স্তরে প্রভাব বিস্তার করছে? 

১. 'ডিপ স্টেট'-এর গঠন এবং প্রকৃতি 
বাংলাদেশের 'ডিপ স্টেট' বা 'অদৃশ্য রাষ্ট্রশক্তি' মূলত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষমতাধর উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত—

সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ জেনারেলরা:
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী বরাবরই দেশটির রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। স্বাধীনতার পর থেকে একাধিকবার সামরিক বাহিনী ক্ষমতার কেন্দ্রে এসেছে সরাসরি কিংবা পরোক্ষভাবে। বর্তমানে, সরাসরি রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর ভূমিকা দৃশ্যমান না হলেও নেপথ্যে থাকা উচ্চপদস্থ জেনারেলরা রাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারণী বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রভাব বিস্তার করেন বলে ধারণা করা হয়। জাতীয় নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা কৌশল, বৈদেশিক সম্পর্কসহ গুরুত্বপূর্ণ নীতিগুলোতে এই শ্রেণির কর্মকর্তাদের নেপথ্য ভূমিকা বাংলাদেশের ডিপ স্টেটের একটি প্রধান স্তম্ভ।

প্রভাবশালী বেসামরিক আমলাতন্ত্রের শীর্ষকর্তারা:
বেসামরিক আমলাতন্ত্রের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বাংলাদেশের প্রশাসনিক ও নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণে অত্যন্ত প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করেন। সচিব, যুগ্ম-সচিব, ও অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা সাধারণত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী বিষয়ে সরাসরি ভূমিকা রাখেন। রাজনৈতিক দল ও সরকারের পরিবর্তন হলেও প্রশাসনিক আমলাতন্ত্রের ক্ষমতার কাঠামো স্থায়ী থাকে। ফলে, তাদের নীতি-পরিকল্পনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ক্ষমতা রয়েছে, যা তাদেরকে ডিপ স্টেটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদানে পরিণত করেছে।

'ডগিফাই' নামে একটি রহস্যময় প্রভাবশালী সংস্থা:
'ডগিফাই' শব্দটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক আলোচনায় তুলনামূলক নতুন এবং রহস্যজনক এক সংস্থা হিসেবে বিবেচিত। অনেক বিশ্লেষক ধারণা করেন, এটি মূলত গোয়েন্দা, নজরদারি বা বিশেষ কোনো নেপথ্য প্রভাবক গোষ্ঠী হতে পারে। সংস্থাটি দৃশ্যমান কোনো সাংবিধানিক বা প্রশাসনিক কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত নয়, কিন্তু এটি সরাসরি ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত বলে অনুমান করা হয়। ডগিফাই এমন একটি ক্ষমতা-নেটওয়ার্ক, যা সংবাদমাধ্যম, তথ্যপ্রযুক্তি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজে তথ্য প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব বিস্তার করে।
এই তিনটি উপাদানই দৃশ্যমান নির্বাচিত সরকার ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের বাইরে থেকেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণ এবং বাস্তবায়নে নির্ধারক ভূমিকা পালন করে। ফলে বাংলাদেশের ক্ষমতার ভারসাম্যে তাদের অবদানকে ব্যাপকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং গভীরভাবে প্রভাবশালী বলে বিবেচনা করা হয়।

২. ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার রহস্য: ৪ আগস্ট ও ৫ আগস্টের ঘটনা 
২০২৪ সালের ৪ এবং ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলি দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ। মূলত এই দু'দিনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো বাংলাদেশের ক্ষমতার পেছনে থাকা 'ডিপ স্টেট' বা 'অদৃশ্য রাষ্ট্রশক্তি'র প্রকৃত অবস্থান ও প্রভাবকে প্রকাশ্যে এনেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। এই দুটি দিনকে রাজনৈতিক মহলে "The 4th and 5th August Events" নামে উল্লেখ করা হচ্ছে।
৪ আগস্টের ঘটনা: পুলিশের নির্দিষ্ট এলাকায় গুলি চালানো বন্ধের সিদ্ধান্ত
২০২৪ সালের ৪ আগস্ট, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে হঠাৎ করেই এক গুরুত্বপূর্ণ ও আকস্মিক ঘোষণা আসে। ঘোষণা করা হয়, পুলিশের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় বিক্ষোভ, মিছিল বা সমাবেশের সময় আর গুলি চালানো হবে না। এই ঘোষণাটি ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এর ফলে মনে করা হচ্ছিল সরকারের তরফ থেকে সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে রাজনৈতিক সমঝোতা ও স্থিতিশীলতার পথে যাওয়ার একটি স্পষ্ট সংকেত দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও রাজনৈতিক দলগুলো এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে মন্তব্য করেছিল যে, সরকার হয়তো জনগণের মতামত ও গণতান্ত্রিক দাবিগুলোকে আরো গুরুত্ব দিতে চাচ্ছে।
এই ঘোষণার মাধ্যমে দৃশ্যত সরকারের এমন মনোভাব প্রকাশ পেয়েছিল যে, তারা আর প্রশাসনিক বলপ্রয়োগ বা পুলিশের শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বিরোধী দল ও ভিন্নমত দমনের পন্থা অনুসরণ করতে আগ্রহী নয়।
৫ আগস্টের ঘটনা: আগের দিনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার
কিন্তু ঠিক পরদিন, ৫ আগস্টেই ঘটল উল্টো এক দৃশ্যপট। সরকার আগের দিনের নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত থেকে পুরোপুরি সরে এসে পুলিশের গুলি চালানোর আগের নীতিতে পুনরায় ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এই হঠাৎ পরিবর্তনের জন্য কোনো স্পষ্ট কারণ বা যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে। ফলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দেয়—কী এমন ঘটেছিল মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে, যার কারণে সরকারের এত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি সম্পূর্ণ বিপরীত হয়ে গেল?
এই দুই দিনের ঘটনার গভীর তাৎপর্য
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই আকস্মিক ও নাটকীয় পরিবর্তনের ঘটনা গভীরভাবে পর্যালোচনা করে মতামত দিয়েছেন যে, এই ঘটনাগুলো আসলে বাংলাদেশের ক্ষমতার পেছনে থাকা 'ডিপ স্টেট'-এর অভ্যন্তরীণ শক্তিসম্পর্কের একটি দৃশ্যমান ইঙ্গিত। সরকারের এমন দ্রুত ও স্পষ্ট অবস্থান পরিবর্তনের পেছনে যে বাহ্যিক ও দৃশ্যমান কারণ ছিল না, তা থেকেই অনুমান করা হয় যে কোনো অদৃশ্য, শক্তিশালী রাষ্ট্রশক্তির হস্তক্ষেপের কারণে সরকারের এমন আকস্মিক সিদ্ধান্ত পরিবর্তন ঘটেছিল।
বিশ্লেষকদের মতে, সরকার প্রথমে সহিংসতা কমানোর নীতি গ্রহণ করার মাধ্যমে রাজনৈতিক নমনীয়তার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলেও, পরদিনই দেখা গেছে সামরিক ও প্রশাসনিক অভ্যন্তরীণ মহলগুলো থেকে সরকারের উপর প্রবল চাপ এসেছে, যার ফলে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে হয়েছে। এ থেকে স্পষ্ট হয় যে, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের টিকে থাকা ও ক্ষমতা ধরে রাখা শুধু জনসমর্থন বা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে অর্জিত রাজনৈতিক বৈধতার উপর নির্ভর করে না; বরং প্রশাসনিক ও সামরিক বাহিনীর প্রভাবশালী ও শক্তিশালী মহল—যাদেরকে ডিপ স্টেট বলা হচ্ছে—তাদের সক্রিয় সমর্থন ও অনুমোদনের উপর নির্ভরশীল।
ডিপ স্টেটের অবস্থান প্রকাশের স্পষ্ট উদাহরণ
এই ৪ ও ৫ আগস্টের ঘটনার মাধ্যমে পরিষ্কার হয়েছে যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ক্ষমতার প্রকৃত কেন্দ্র শুধুমাত্র রাজনৈতিক নেতৃত্ব বা রাজনৈতিক দলের নিয়ন্ত্রণে নেই। বরং সামরিক, প্রশাসনিক এবং অদৃশ্য নেটওয়ার্ক বা সংস্থার সিদ্ধান্ত ও অবস্থান বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই দুই দিনের ঘটনাই স্পষ্টভাবে ডিপ স্টেটের উপস্থিতি ও সক্রিয় ভূমিকা বোঝার জন্য একটি ক্লাসিক উদাহরণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
সুতরাং, এই ঘটনাগুলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে ক্ষমতার প্রকৃত ধরন, তার বাস্তব প্রভাবক, এবং সরকারের সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় 'ডিপ স্টেট'-এর তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা প্রকাশ করেছে। এটা প্রমাণ করেছে, সরকারের দৃশ্যমান সিদ্ধান্তের পেছনে এমন অদৃশ্য ও ক্ষমতাধর মহল সক্রিয় রয়েছে, যারা রাজনৈতিক দল ও সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তার বাস্তবায়ন উভয় ক্ষেত্রেই গভীর প্রভাব বিস্তার করে চলেছে।

৩. ১/১১ পরবর্তী শক্তির ভূমিকা ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান (Post-1/11 Forces and the July Uprising)
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি (যা বহুল আলোচিত '১/১১' নামে পরিচিত) বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়। এই দিনে জরুরি অবস্থা জারির মাধ্যমে ক্ষমতার কেন্দ্রে আসে সেনা সমর্থিত একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ক্ষমতার এই আকস্মিক পালাবদল দেশটির রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। দৃশ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে থেকে, প্রশাসনিক ও সামরিক শক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি নতুন ও অপ্রত্যাশিত ক্ষমতার কাঠামো দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ১/১১-এর এই প্রশাসনিক ও সামরিক শক্তিগুলোই পরবর্তীতে বাংলাদেশের 'ডিপ স্টেট'-এর ভিত্তি ও শক্তিশালী কাঠামো হিসেবে বিবেচিত হতে শুরু করে।
১/১১-এর রাজনৈতিক পরিবর্তন ও ডিপ স্টেটের উত্থান
১/১১-এর পর বাংলাদেশে ক্ষমতার মূল কেন্দ্রে উঠে আসে একটি শক্তিশালী সামরিক ও প্রশাসনিক শ্রেণি, যারা ক্ষমতার দৃশ্যমান মুখ হিসেবে ছিল না, কিন্তু মূল ক্ষমতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের কাঠামোতে তাদের ভূমিকা ছিল ব্যাপক। এই শক্তিগুলো নিজেদের ক্ষমতা ও প্রভাব টিকিয়ে রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোকে দুর্বল করা, গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা, এবং বিচারিক ও প্রশাসনিক কাঠামোর ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সচেষ্ট হয়। দৃশ্যত অসাংবিধানিক হলেও তারা নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল ব্যাপক প্রশাসনিক ক্ষমতা ও সেনাবাহিনীর প্রভাবের কারণে।
২০০৯ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থান: ডিপ স্টেটের দৃশ্যমান ভূমিকা
২০০৯ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশে একটি উল্লেখযোগ্য গণঅভ্যুত্থান ঘটে। মূলত এই অভ্যুত্থান ছিল সামরিক ও প্রশাসনিক শক্তিগুলোর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাবের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিক্রিয়া। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই অভ্যুত্থানেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল সেই একই প্রশাসনিক ও সামরিক গোষ্ঠী— যারা ১/১১-এর রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরাজিত অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিলেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল নিজেদের হারানো প্রভাব পুনরুদ্ধার করা, রাজনৈতিক অবস্থানকে পুনরায় শক্তিশালী করা, এবং নতুন সরকার ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করা।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের সুযোগ থাকলেও, পর্দার অন্তরালে থেকে প্রশাসনিক ও সামরিক গোষ্ঠীগুলো আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরে কৌশলে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে। অর্থাৎ, গণঅভ্যুত্থানের মুখ্য অংশে জনগণ থাকলেও, নেপথ্যে ছিল এই ডিপ স্টেটেরই সক্রিয় ভূমিকা।
৫ আগস্টের পরবর্তী দৃশ্যপট এবং ডিপ স্টেটের অবস্থান পরিবর্তন
২০২৪ সালের ৪ ও ৫ আগস্টের ঘটনার পর রাজনৈতিক বাস্তবতায় যে নাটকীয় মোড় আসে, তা আবারও প্রকাশ করে দেয় ডিপ স্টেটের আসল চরিত্র। ৫ আগস্টের পর যখন সরকার হঠাৎ আগের দিনের গণতান্ত্রিক ও নরম মনোভাব থেকে সরে এসে আবারও প্রশাসনিক কঠোরতার পথ গ্রহণ করে, তখন স্পষ্ট হয়ে যায় যে ডিপ স্টেট কোনো স্থির বা একক রাজনৈতিক আদর্শে পরিচালিত নয়।
এই ঘটনার মাধ্যমে পরিষ্কার হয়ে যায় যে, প্রশাসনিক ও সামরিক শক্তিগুলো বরং পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে নিজেদের অবস্থান বদলায়, যেখানে তাদের নিজস্ব স্বার্থ এবং ক্ষমতা রক্ষার বিষয়টিই মুখ্য। তাদের লক্ষ্য কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তিকে ক্ষমতায় রাখা নয়; বরং সর্বদা প্রশাসনিক ও সামরিক প্রভাবের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নিজেদের আধিপত্য ও ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা।
ডিপ স্টেটের স্বার্থবাদী চরিত্র ও অভিযোজন ক্ষমতা
বিশ্লেষকরা তাই ডিপ স্টেটকে এমন একটি 'প্রভাবশালী কিন্তু অদৃশ্য শক্তি' হিসেবে বর্ণনা করেন, যারা ক্ষমতার কাঠামোতে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে এবং দীর্ঘমেয়াদী অবস্থান ধরে রাখতে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও সামরিক অবস্থান বদলাতে দ্বিধা করে না। তারা ক্ষমতার ভারসাম্য নিজেদের পক্ষে রাখতে কখনও রাজনৈতিক দলগুলোর পাশে দাঁড়ায়, আবার পরিস্থিতির পরিবর্তন হলে তাদের বিরুদ্ধেও অবস্থান নেয়।
এভাবেই ডিপ স্টেট তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখে— যেখানে জনসমর্থনের বাইরেও প্রশাসনিক ও সামরিক আধিপত্যের মাধ্যমে রাষ্ট্রের নীতি ও রাজনৈতিক ক্ষমতা নির্ধারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা যায়।
চূড়ান্ত বিশ্লেষণ: ১/১১ থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত 'ডিপ স্টেট'-এর বিবর্তন
১/১১ থেকে শুরু করে ২০০৯ সালের জুলাই অভ্যুত্থান, এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের ঘটনার মাধ্যমে বাংলাদেশের ডিপ স্টেটের বিবর্তন ও সক্রিয় ভূমিকা সুস্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। এই তিনটি ঘটনাই প্রমাণ করেছে যে, প্রশাসনিক ও সামরিক অভিজাত শ্রেণি বাংলাদেশের রাজনীতিতে নিজেদের প্রভাব বজায় রাখতে নিরন্তর সক্রিয় রয়েছে। তবে তাদের কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক লক্ষ্য নেই; বরং পরিস্থিতি ও পরিবেশ অনুযায়ী নিজেদের অভিযোজিত করার এক অসাধারণ ক্ষমতার অধিকারী তারা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক কাঠামোর ভবিষ্যতের জন্য এই প্রশাসনিক ও সামরিক ছায়াশক্তির অবস্থান ও উদ্দেশ্য গভীরভাবে বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৪. ইউনুস প্রশাসন এবং ডিপ স্টেটের পুনরুত্থান 
ড. মুহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশের রাজনীতিতে একজন বহুল আলোচিত ব্যক্তিত্ব, যিনি নোবেল বিজয়ী ও বিশ্বজুড়ে সম্মানিত হলেও দেশীয় রাজনীতিতে তার ক্ষমতায় আসা ছিল সম্পূর্ণ নতুন ও অনেকটা অপ্রত্যাশিত একটি অধ্যায়। ইউনুস প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর দেশটির রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থায় কাঠামোগত ও মৌলিক পরিবর্তনের আশা করা হলেও বাস্তবে তেমন বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়নি। বরং প্রশাসনিক কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো কার্যত অপরিবর্তিত থেকে যায়। এতে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, দৃশ্যমান রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তন হলেও বাংলাদেশের ক্ষমতার আসল কেন্দ্রবিন্দু— অর্থাৎ ডিপ স্টেট বা অদৃশ্য প্রশাসনিক ও সামরিক শক্তি—তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মুখোমুখি হয়নি।
ইউনুস প্রশাসনের ক্ষমতাগ্রহণ: প্রত্যাশা ও বাস্তবতা
ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকার গঠনের সময় বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের বিশাল প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত রাজনৈতিক ব্যবস্থার বাইরে থেকে সমাজ সংস্কার, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন এবং স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনের অঙ্গীকার করেছিলেন। অনেকেই আশা করেছিল যে, ইউনুসের সরকার ক্ষমতায় এলে প্রশাসনিক কাঠামোয় উল্লেখযোগ্য সংস্কার হবে এবং পূর্ববর্তী প্রশাসনের ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক আমলাতন্ত্রের প্রভাব হ্রাস পাবে।
তবে বাস্তবে দেখা যায়, প্রশাসনের কাঠামো ও চরিত্রে কোনো বড় ধরনের মৌলিক পরিবর্তন ঘটেনি। প্রশাসনিক ও আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিই স্বপদে বহাল থেকেছেন অথবা অভ্যন্তরীণ সমঝোতার মাধ্যমে অন্য পদে পুনর্বাসিত হয়েছেন। এতে স্পষ্ট হয়, দৃশ্যমান রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তন হলেও প্রশাসনিক ও সামরিক শক্তির গভীর, স্থায়ী প্রভাব অপরিবর্তিত ছিল।
আমলা ও অফিসারদের পরিবর্তন: বাস্তবতা বনাম প্রত্যাশা
ইউনুস সরকার ক্ষমতায় আসার পর কিছু আমলা ও অফিসারকে পদ থেকে সরিয়ে নতুন নিয়োগ দিলেও, মূল প্রশাসনিক কাঠামো এবং প্রভাবশালী আমলাতান্ত্রিক শ্রেণির ক্ষমতা অক্ষুণ্নই ছিল। পরিবর্তনের মুখে পড়া এই ছোট সংখ্যক কর্মকর্তার বেশিরভাগই ছিল অপেক্ষাকৃত নিম্ন বা মধ্যস্তরের আমলা, যারা প্রশাসনিক কাঠামোর মূল সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম ছিলেন না।
অন্যদিকে, উচ্চপদস্থ, প্রভাবশালী আমলারা যাদের দীর্ঘদিনের ক্ষমতা ও প্রভাব প্রশাসনিক কাঠামোতে গভীরভাবে প্রোথিত ছিল, তারা প্রশাসনে স্বপদে কিংবা সমমর্যাদার অন্য পদে থেকে নিজেদের প্রভাব ধরে রাখেন। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ও নীতিনির্ধারণী পদে আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ আমলাদের নিয়োগের মাধ্যমে ডিপ স্টেটের ক্ষমতা ও প্রভাব বরং আরও বেশি শক্তিশালী ও দৃঢ় হয়ে ওঠে।
আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ আমলাদের নিয়োগ ও ডিপ স্টেটের পুনরুজ্জীবন
ইউনুস প্রশাসন দৃশ্যত আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও বাস্তবে প্রশাসনিক ও সামরিক কাঠামোতে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ দেওয়া আমলা এবং অফিসারদের ব্যাপক উপস্থিতি অক্ষুণ্ন থাকে। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, এর পেছনে ছিল প্রশাসনিক কাঠামোর স্থায়িত্ব ও কার্যকরিত্ব ধরে রাখার যুক্তি। প্রশাসনের প্রধান অংশগুলো পরিবর্তন করলে প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা বা অস্থিতিশীলতার আশঙ্কাও ছিল ইউনুস প্রশাসনের মাথায়।
কিন্তু এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রশাসনিক আমলারা নিজেদের অবস্থানকে আরও সংহত করেন। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ, প্রশাসনিক নীতিমালা বাস্তবায়ন ও সরকারি প্রকল্পের পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এই আমলাতান্ত্রিক গোষ্ঠী নিজেদের ক্ষমতা আরও বেশি প্রসারিত করার সুযোগ পায়।
ক্ষমতার পরিবর্তন বনাম ডিপ স্টেটের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ
ড. ইউনুসের ক্ষমতায় আসার ঘটনা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, বাংলাদেশের ডিপ স্টেটের আসল শক্তি রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির পরিবর্তনে তেমন প্রভাবিত হয় না। বরং প্রশাসনিক ও সামরিক কাঠামোর মধ্যে একটি স্থায়ী ক্ষমতার কাঠামো রয়েছে, যা সবসময় পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে এবং প্রয়োজনে দৃশ্যমান রাজনৈতিক নেতৃত্বের সাথে সমঝোতা করতে সক্ষম।
ইউনুস প্রশাসনেও ডিপ স্টেটের এই অভিযোজিত ও সক্রিয় উপস্থিতি পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হয়েছে। প্রশাসনিক নীতি-নির্ধারণ, অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সামরিক ও নিরাপত্তা নীতিসহ প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেই প্রশাসনিক আমলা ও উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের অদৃশ্য প্রভাব ছিল ব্যাপক এবং সুস্পষ্ট। ফলে ইউনুসের দৃশ্যমান রাজনৈতিক প্রশাসন প্রশাসনিক কাঠামোর গভীর ও মূল ক্ষমতার কাঠামোতে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারেনি।
ডিপ স্টেটের অদৃশ্য স্থায়িত্ব
ড. মুহাম্মদ ইউনুসের প্রশাসনের ক্ষমতায় আসা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার পরিবর্তনহীনতার ঘটনাটি পরিষ্কারভাবে প্রকাশ করেছে যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামোতে ডিপ স্টেটের অবস্থান অত্যন্ত স্থায়ী, শক্তিশালী এবং কার্যকর। দৃশ্যমান রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্বের পরিবর্তন হয়, কিন্তু প্রশাসনিক, সামরিক এবং নেপথ্য রাষ্ট্রশক্তির মূল প্রভাব ও ক্ষমতার ভারসাম্য খুব একটা বদলায় না। ক্ষমতার এই অদৃশ্য স্থিতাবস্থা ও প্রশাসনিক শ্রেণির স্থায়িত্বই বাংলাদেশের ডিপ স্টেটের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য এবং এর স্থায়ী প্রভাবের মূল কারণ।
অর্থাৎ, ডিপ স্টেট বাংলাদেশের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও সামরিক ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে, যার প্রভাব ও অবস্থান দীর্ঘমেয়াদি এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তনের মধ্যেও অপরিবর্তিত ও অবিচ্ছিন্ন থাকে।
________________________________________
৫. প্রশাসনিক দমননীতি ও রেজাউল মল্লিক ইস্যু 
ডিবির সাবেক প্রধান রেজাউল মল্লিক সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছিলেন। ডিপ স্টেটের আদেশ অমান্য করায় তাকে দ্রুত সরিয়ে ফেলা হয়।
এ ঘটনা দেখায়, যারা ক্ষমতার অদৃশ্য নিয়ম মানে না, তারা প্রশাসনিকভাবে নির্মূল হয়।
________________________________________
৬. মিডিয়া এবং সাংস্কৃতিক খাতের ভূমিকা 
মিডিয়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন সম্পূর্ণভাবে অক্ষত ও ডিপ স্টেটের প্রভাবাধীন রয়েছে।
এর মাধ্যমে জনমতকে নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে প্রচারণা অব্যাহত রাখা হচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য এক বড় বাধা।
________________________________________
৭. বিএনপি এবং গুজবের রাজনীতি 
৫ আগস্টের পরে বিএনপি দ্রুত সংগঠিত হলেও, গুজব ছড়ানো থামেনি।
ভুয়া ভিডিও এবং মিথ্যা প্রচারণা দেখিয়ে বিরোধী দলকে দুর্বল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ডগিফাই-সহ অন্যান্য প্রভাবশালী সংস্থা গুজব ছড়িয়ে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ে ভূমিকা রাখছে বলে অভিযোগ।
________________________________________
৮. ইউনুস সরকার ও অর্গানিক প্রচারণা বিতর্ক 
ড. ইউনুসকে পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় রাখার প্রচারণা 'অর্গানিক' (স্বাভাবিক) নয় বলে অভিযোগ উঠেছে।একই ধরনের পোস্ট বহু ফেসবুক পেজে একযোগে ছড়ানো হয়েছে, যা পরিকল্পিত প্রচারণার ইঙ্গিত দেয়। বিশ্লেষকদের মতে, এটি 'ডগিফাই' নামক গোষ্ঠীর সোশ্যাল মিডিয়া প্রভাব ব্যবস্থার অংশ।
________________________________________
৯. প্রকৃত সংস্কার বনাম কৃত্রিম সংস্কার 
সরকার প্রশাসনিক ও পুলিশ সংস্কারের কথা বললেও বাস্তবে কোনো ফলপ্রসূ উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
•    পুলিশ সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়নি।
•    জামাতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার প্রশ্নে বিলম্ব।
•    যেসব অফিসাররা সরকারের বিরোধিতা করছে, তাদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এসব ঘটনাই দেখাচ্ছে, প্রকৃত সংস্কার নয়—ক্ষমতা টিকিয়ে রাখাই আসল এজেন্ডা।
________________________________________
১০. ডিপ স্টেটের তিনটি কৌশলগত লক্ষ্য 
১. ড. ইউনুসকে পাঁচ বছর টিকিয়ে রাখা এবং তার মাধ্যমে নতুন বিকল্প নেতৃত্ব তৈরি।
২. আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করে ভবিষ্যতের জন্য আবারো মূলধারায় ফিরিয়ে আনা।
৩. যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে তাদেরও ডিপ স্টেটের নিয়ন্ত্রণে রাখা বা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা।

ডিপ স্টেট কখনোই সহজে হার মানবে না।
এটি প্রশাসন, বিচার বিভাগ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং মিডিয়ার ভিতরে রয়ে গেছে।
বাংলাদেশে প্রকৃত গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে হলে শুধু রাজনৈতিক দল নয়, বরং প্রশাসনিক কাঠামো ও অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে সমন্বিত সংস্কার কর্মসূচি চালাতে হবে।
পুলিশ, প্রশাসন ও বিচার বিভাগে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা ছাড়া ভবিষ্যতে গণতন্ত্রের বিকাশ সম্ভব নয়।


মোঃ হোসাইন আল রাশেদ বাদল
ব্যাচেলর ও মাস্টার্স ডিগ্রি
আইন ও বিচার অনুষদ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
যুগ্ম আহ্বায়ক জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
ফেলো, অ্যারিজোনা স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন
গবেষণা সহকারী
ইকোলজিকাল রাইট প্রজেক্ট এবং প্রি-ডক্টরাল শিক্ষার্থী
জেমস ই. রজার্স কলেজ অব ল, ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনা, যুক্তরাষ্ট্র

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়