বাংলাদেশ চীনের সহায়তায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য বেইজিংয়ের কাছে প্রায় ৫৫ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে ঢাকা, আর চীন এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। প্রকল্পটি সরেজমিনে যাচাই করতে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বাংলাদেশে আসছে দেশটির একটি কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল।
সোমবার সকালে পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়ামের সঙ্গে বৈঠকে এ তথ্য জানান ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, তিস্তা প্রকল্প নিয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে চীন।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ‘কম্প্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন অব তিস্তা রিভার প্রজেক্ট’ বাস্তবায়নে চীনের ঋণ চেয়ে গত জুলাইয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠায় ইআরডি। এর আগে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ও পরিকল্পনা কমিশনকে চিঠি দিয়ে চীনের ঋণ নেওয়ার সুপারিশ করে। সরকারের লক্ষ্য চলতি বছরের মধ্যেই আর্থিক চুক্তি সই করা।
বৈঠকে আরও আলোচনা হয় চীনের অর্থায়নে বাংলাদেশে হাসপাতাল নির্মাণসহ অন্যান্য প্রকল্প, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর অগ্রগতি, এবং প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বৈশ্বিক সুশাসন উদ্যোগে (জিজিআই) বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে। ইয়াও ওয়েন জানান, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮০ কোটি ডলারে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
তিস্তা মহাপরিকল্পনার প্রথম ধাপে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭৫ কোটি ডলার। এর মধ্যে ৫৫ কোটি ডলার আসবে চীনের ঋণ থেকে, আর বাকি অর্থ যোগান দেবে সরকার। ২০২৬ সালে কাজ শুরু করে ২০২৯ সালের মধ্যে প্রকল্প শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, তিস্তা প্রকল্পে অতীতে চীন ও ভারত দুই দেশই আগ্রহ দেখিয়েছে। ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়েত্রা ২০২৪ সালের মে মাসে বাংলাদেশ সফরে এসে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও চাইতেন, প্রকল্পটিতে ভারত এগিয়ে আসুক। তবে অন্তর্বর্তী সরকার এখন চীনের সঙ্গে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দিকেই অগ্রসর হচ্ছে।