হামিদুল ইসলাম,
লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি।
কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায় সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাৎ এর অভিযোগে স্থানীয় এক ডিলার রবিউল হোসেনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। সরকারি খাদ্য সহায়তা যারা পেতে সবচেয়ে বেশি অধিকারী, সেই অসহায় দরিদ্র জনগণের প্রাপ্য চাল অবৈধভাবে আত্মসাৎ করার মতো গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে এ সাজা দেওয়া হয়।
জানা গেছে, ডিলার রবিউল হোসেন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দকৃত চাল সঠিকভাবে বিতরণ না করে গোপনে বিক্রি করে দেন। এ বিষয়ে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়। এরপর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনাস্থলে তদন্ত পরিচালনা করা হয়।
তদন্তে প্রমাণিত হয় যে, ডিলার রবিউল হোসেন সরকার নির্ধারিত তালিকার বাইরে গিয়ে চাল সরবরাহ করেননি বরং বড় একটি অংশ গোপনে বিক্রি করেছেন, যা রাষ্ট্রের সম্পদের সরাসরি অপব্যবহার এবং জনগণের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। আদালত ডিলার রবিউল হোসেনকে ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন’ এবং ‘জরুরি খাদ্য সংরক্ষণ আইন’-এর আওতায় ছয় মাসের কারাদণ্ড প্রদান করে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, “সরকারের পক্ষ থেকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য যেসব মানবিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা যেন কেউ ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে, সে বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। এই রায় অন্যদের জন্য সতর্কবার্তা হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “জনগণের প্রাপ্য চাল আত্মসাৎ করে যারা দুর্নীতির আশ্রয় নেয়, তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। এই রায়ে প্রশাসনের প্রতি আমাদের আস্থা আরও বেড়েছে।”
প্রসঙ্গত, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় সরকার দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা পরিবারগুলোকে নির্ধারিত মূল্যে (প্রতি কেজি মাত্র ১০ টাকা) চাল সরবরাহ করে থাকে। এই কর্মসূচি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দরিদ্র জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে আসছে।
জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ডিলারদের কার্যক্রম তদারকি এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রশাসনের এমন পদক্ষেপকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে সচেতন মহল