দিনে রোদে গরম, কিন্তু ভোরের হিমেল হাওয়ায় টের পাওয়া যাচ্ছে শীত একেবারে দোরগোড়ায়। এমন সময় শিশুদের সর্দি-কাশি খুব সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু ছোট্ট শিশুটি যখন কাশতে কাশতে ঘুমাতে পারে না, তখন মা–বাবার চিন্তার সীমা থাকে না। তাড়াহুড়ো করে কফ সিরাপের বোতল খুলে দেন অনেকে ভাবেন এতে দ্রুত আরাম মিলবে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের কাশির সিরাপে শিশু মৃত্যুর ঘটনা অভিভাবকদের মনে বড় প্রশ্ন জাগিয়েছে কাশির সিরাপ কি আদৌ নিরাপদ?
কাশির সিরাপের লুকানো ঝুঁকি:
চিকিৎসকরা বহুদিন ধরেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কাশির সিরাপে থাকতে পারে ক্ষতিকর বা বিষাক্ত রাসায়নিক। ভারতের আগে আফ্রিকার কয়েকটি দেশ ও উজবেকিস্তানেও এমন সিরাপের কারণে শিশু মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল।
বাজারের বেশিরভাগ সিরাপই আসলে অ্যান্টিহিস্টামিন, ডিকনজেস্ট্যান্ট, এক্সপেক্টোরেন্টের মিশ্রণ, যার সঙ্গে থাকে চিনি ও রঙ। এগুলোর কাজ আলাদা একটি শ্লেষ্মা কমায়, আরেকটি কফ আলাদা করে, তৃতীয়টি কাশির দমক থামায়। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, এর প্রকৃত উপকারিতা খুবই সীমিত।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, কিছু সিরাপে থাকে কোডিন, যা আসক্তি তৈরি করতে পারে। শিশুদের জন্য এসব ওষুধ একেবারেই অনুপযুক্ত।
ঘন ঘন কাশি হলে অনেক অভিভাবক চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধের দোকান থেকে সিরাপ কিনে খাওয়ান। কেউ কেউ আবার বড়দের সিরাপের অল্প ডোজ দিয়ে দেন শিশুকে।
এই অভ্যাস ভয়াবহ কারণ শিশুদের শরীরের গঠন ও ওষুধ গ্রহণক্ষমতা বড়দের মতো নয়। বয়স ও ওজন অনুযায়ী সামান্য ডোজের ভুলেও হতে পারে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় শিশুর দেহে কী ঘটে?:
অধিকাংশ সাধারণ কাশি নিজে থেকেই ভালো হয়ে যায় ওষুধ লাগে না। শিশুর আরামের জন্য ঘরে যা করতে পারেনঃ
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি:
যদি কাশি দীর্ঘস্থায়ী হয়, অথবা শিশুর শ্বাসকষ্ট, জ্বর, খাওয়ার অনীহা, বা অস্বাভাবিক দুর্বলতা দেখা দেয় তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।
কাশির কারণ হতে পারে ব্রঙ্কিওলাইটিস, নিউমোনিয়া, টনসিলাইটিস, হাঁপানি, এমনকি হৃৎপিণ্ডের জন্মগত সমস্যা। সঠিক কারণ না জানলে ভুল ওষুধে বিপদ বাড়তে পারে।
শেষ কথা
কাশি মানেই সিরাপ নয়। শিশুর সামান্য কাশি বা ঠান্ডা হলে ভয় না পেয়ে আগে ঘরোয়া যত্ন নিন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন ভালোবাসা আর যত্নই শিশুর সেরা ওষুধ।